এসইও টিউটোরিয়াল - তৃতীয় পর্ব: টেকনিক্যাল এসইও (SEO Tutorial Part 3 : Technical SEO)

এসইও টিউটোরিয়াল - তৃতীয় পর্ব টেকনিক্যাল এসইও

প্রথম দুই পর্বে, আমরা কিওয়ার্ড রিসার্চ এবং অন পেইজ এসইও নিয়ে আলোচনা করেছি এবং দেখেছি যে এই দুটি বিষয় একটি ওয়েবসাইটের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কিওয়ার্ড রিসার্চ আমাদের জানতে সাহায্য করে যে ব্যবহারকারীরা কী খুঁজছেন, এবং অন পেইজ এসইও আমাদের ওয়েবসাইটকে সেই অনুযায়ী অপটিমাইজ করতে সাহায্য করে।

টেকনিক্যাল এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে আমরা একটি ওয়েবসাইটের প্রযুক্তিগত দিকগুলো অপটিমাইজ করি, যাতে সার্চ ইঞ্জিন ক্রলাররা আমাদের সাইট সহজে খুঁজে পায় এবং ইন্ডেক্স করতে পারে। একটি ওয়েবসাইটের কাঠামো, স্পিড, মোবাইল-ফ্রেন্ডলিনেস এবং সুরক্ষা বা সিকুরিটি- এই সবকিছুই টেকনিক্যাল এসইও-এর আওতায় আসে।

এই পর্বে, আমরা টেকনিক্যাল এসইও নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং দেখব যে কীভাবে এটি একটি ওয়েবসাইটের সামগ্রিক পারফরম্যান্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা "টেকনিক্যাল এসইও" এর বিভিন্ন দিক এবং এটি ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিংয়ের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে, সে সম্পর্কেও জানব।

টেকনিক্যাল এসইও কি? (What is Technical SEO?)

টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO) হলো একটি ওয়েবসাইটের প্রযুক্তিগত দিকগুলো অপটিমাইজ করার প্রক্রিয়া, যাতে সার্চ ইঞ্জিন ক্রলাররা ওয়েবসাইটটিকে সহজে খুঁজে পেতে এবং ইন্ডেক্স করতে পারে। সহজ ভাষায়, এটি নিশ্চিত করে যে আপনার ওয়েবসাইটের কাঠামো এবং কোড সার্চ ইঞ্জিনগুলোর জন্য বোধগম্য।

টেকনিক্যাল এসইও-এর মূল ধারণা হলো ওয়েবসাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ করা। এর মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইটের স্পিড, মোবাইল-ফ্রেন্ডলিনেস, সাইট আর্কিটেকচার, সুরক্ষা বা সিকুরিটি এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো অপটিমাইজ করা। এই অপটিমাইজেশনগুলো নিশ্চিত করে যে সার্চ ইঞ্জিন ক্রলাররা কোনো বাধা ছাড়াই আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট অ্যাক্সেস করতে পারে এবং সেগুলোকে সঠিকভাবে ইন্ডেক্স করতে পারে।

টেকনিক্যাল এসইও, অন পেইজ এসইও এবং অফ পেইজ এসইও - এই তিনটি এসইও-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কিন্তু এদের কাজ করার ক্ষেত্র ভিন্ন:

অন পেইজ এসইও (On-Page SEO): 

ওয়েবসাইটের পেজের ভেতরের কন্টেন্ট এবং HTML কোড অপটিমাইজ করার ওপর মনোযোগ দেয়। এর মধ্যে রয়েছে কন্টেন্টের মান, কিওয়ার্ড ব্যবহার, টাইটেল ট্যাগ, মেটা ডেসক্রিপশন এবং হেডিং ট্যাগের মতো বিষয়গুলো।

 

অফ পেইজ এসইও (Off-Page SEO): 

ওয়েবসাইটের বাইরের বিষয়গুলো অপটিমাইজ করার ওপর মনোযোগ দেয়। এর মধ্যে প্রধানত ব্যাকলিংক তৈরি করা, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ড মেনশন তৈরি করা।

 

টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO):

ওয়েবসাইটের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো অপটিমাইজ করার ওপর মনোযোগ দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইটের স্পিড, মোবাইল-ফ্রেন্ডলিনেস, সাইট আর্কিটেকচার, ক্রলিং এবং ইনডেক্সিং, এবং সুরক্ষা।

টেকনিক্যাল এসইও নিশ্চিত করে যে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনগুলোর জন্য প্রস্তুত, অন পেইজ এসইও আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টকে ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের জন্য অপটিমাইজ করে, এবং অফ পেইজ এসইও অন্যান্য ওয়েবসাইটের কাছ থেকে আপনার ওয়েবসাইটের কর্তৃত্ব এবং খ্যাতি তৈরি করে।

কেন টেকনিক্যাল এসইও গুরুত্বপূর্ণ? (Why is Technical SEO Important?)

টেকনিক্যাল এসইও বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ, যা একটি ওয়েবসাইটের সামগ্রিক সাফল্য এবং অনলাইন রেঙ্কিংকে প্রভাবিত করে। এখানে কিছু মূল কারণ তুলে ধরা হলো:

সার্চ ইঞ্জিন ক্রলিং এবং ইনডেক্সিং উন্নত করে: 

টেকনিক্যাল এসইও নিশ্চিত করে যে সার্চ ইঞ্জিন ক্রলাররা আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট সহজে খুঁজে পেতে এবং ইন্ডেক্স করতে পারে। একটি ওয়েবসাইটের সাইটম্যাপ, robots.txt ফাইল, এবং সঠিক URL কাঠামো সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার সাইটের গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলো খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। এর ফলে, আপনার ওয়েবসাইটের পেজগুলো সার্চ ফলাফলে দেখানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা (UX) উন্নত করে: 

ওয়েবসাইটের স্পিড, মোবাইল-ফ্রেন্ডলিনেস এবং সহজ নেভিগেশন ব্যবহারকারীর সন্তুষ্টির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেকনিক্যাল এসইও এই বিষয়গুলোর ওপর জোর দেয়, যার ফলে ব্যবহারকারীরা আপনার ওয়েবসাইটে একটি ভালো অভিজ্ঞতা পায়। উদাহরণস্বরূপ, একটি দ্রুত লোডিং ওয়েবসাইট ভিজিটরদের ধরে রাখে এবং বাউন্স রেট কমায়।
 

মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য অপটিমাইজেশন নিশ্চিত করে:

বর্তমানে, মোবাইল ডিভাইস থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি। গুগলও মোবাইল-ফার্স্ট ইনডেক্সিং ব্যবহার করে। তাই, টেকনিক্যাল এসইও নিশ্চিত করে যে আপনার ওয়েবসাইট মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য সম্পূর্ণরূপে অপটিমাইজ করা হয়েছে, যা ভালো র‍্যাংকিংয়ের জন্য অপরিহার্য।
 

ওয়েবসাইটের সামগ্রিক কর্মক্ষমতা এবং র‍্যাঙ্কিং উন্নত করে: 

এই তিনটি কারণের সম্মিলিত প্রভাবে, টেকনিক্যাল এসইও একটি ওয়েবসাইটের সামগ্রিক কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং সার্চ ইঞ্জিন ফলাফলে ভালো র‍্যাঙ্কিং পেতে সহায়তা করে। একটি ওয়েবসাইট যদি টেকনিক্যালি শক্তিশালী হয়, তবে এটি সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কাছে আরও বেশি বিশ্বাসযোগ্য এবং কর্তৃত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা শেষ পর্যন্ত আরও বেশি ট্র্যাফিক এবং ব্যবসায়িক সাফল্য নিয়ে আসে। 
 

গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল এসইও উপাদান (Important Technical SEO Elements):

এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল এসইও উপাদান আলোচনা করা হলো:

1. ওয়েবসাইট ক্রলিং এবং ইনডেক্সিং (Website Crawling and Indexing):

ক্রলিং এবং ইনডেক্সিং এর ধারণা

ক্রলিং হল সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনগুলো (যেমন গুগলবট) নতুন বা আপডেট করা ওয়েব পেজ খুঁজে বের করে। ইন্ডেক্সিং হল ক্রল করা পেজগুলোকে তাদের ডাটাবেজে যুক্ত করার প্রক্রিয়া, যাতে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীর অনুসন্ধানের সাথে প্রাসঙ্গিক ফলাফল দেখাতে পারে। 
 

Robots.txt এর গুরুত্ব এবং ব্যবহার

Robots.txt একটি টেক্সট ফাইল যা ওয়েবসাইট মালিকদের সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারদের তাদের ওয়েবসাইটের কিছু অংশ অ্যাক্সেস করা থেকে বিরত রাখতে দেয়। এটি ব্যবহার করে, আপনি ক্রলারদের সার্ভারে অতিরিক্ত চাপ ফেলা থেকে আটকাতে পারেন এবং গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারেন। .
 

XML সাইটম্যাপের গুরুত্ব এবং তৈরি করার নিয়ম:

XML সাইটম্যাপ হল একটি ফাইল যা আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পেজের তালিকা সার্চ ইঞ্জিনকে সরবরাহ করে। এটি সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার সাইটের কাঠামো বুঝতে এবং আরও সহজে ক্রল করতে সাহায্য করে। সাইটম্যাপ তৈরি করার জন্য বিভিন্ন অনলাইন টুল এবং প্লাগইন উপলব্ধ রয়েছে। 
 

Broken লিঙ্ক এবং রিডাইরেক্ট পরিচালনা করা:

Broken লিঙ্কগুলো ব্যবহারকারীদের এবং সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারদের হতাশ করে। নিয়মিতভাবে আপনার ওয়েবসাইটে Broken লিঙ্কগুলো খুঁজে বের করে সেগুলোকে ঠিক করা বা রিডাইরেক্ট করা উচিত। রিডাইরেক্ট ব্যবহার করে, আপনি ব্যবহারকারীদের এবং সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারদের একটি পেজ থেকে অন্য পেজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ে যেতে পারেন।

 

2. ওয়েবসাইট স্পিড এবং পারফরম্যান্স (Website Speed and Performance):

ওয়েবসাইটের স্পিডের গুরুত্ব (Page Load Time):  

ওয়েবসাইটের স্পিড একটি গুরুত্বপূর্ণ র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর। দ্রুত লোডিং স্পিড ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করে এবং বাউন্স রেট কমায়। গুগল পেজ স্পিডকে একটি র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে।
 

স্পিড অপটিমাইজ করার উপায় (ছবি অপটিমাইজ করা, ক্যাশিং, CDN ব্যবহার): 

ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজ করার জন্য ছবিগুলোকে কম্প্রেস করা, ব্রাউজার ক্যাশিং ব্যবহার করা এবং কন্টেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক (CDN) ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, কোড অপটিমাইজ করা এবং সার্ভারের প্রতিক্রিয়া সময় কমানোও গুরুত্বপূর্ণ।
 

Core Web Vitals এবং এর প্রভাব:

Core Web Vitals হলো গুগল কর্তৃক নির্ধারিত কিছু নির্দিষ্ট মেট্রিক যা ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা পরিমাপ করে। এই মেট্রিকগুলো হলো Largest Contentful Paint (LCP), First Input Delay (FID), এবং Cumulative Layout Shift (CLS) এই মেট্রিকগুলো ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিংয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।

 

3. মোবাইল অপটিমাইজেশন (Mobile Optimization):

মোবাইল-ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইটের গুরুত্ব:  

 
বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ডেস্কটপ ব্যবহারকারীর চেয়ে অনেক বেশি। গুগল মোবাইল-ফার্স্ট ইনডেক্সিং ব্যবহার করে, যার মানে গুগল মূলত মোবাইল সংস্করণকে ইন্ডেক্স করে এবং র‍্যাঙ্কিংয়ের জন্য বিবেচনা করে। তাই, আপনার ওয়েবসাইটকে মোবাইল-ফ্রেন্ডলি করা অত্যন্ত জরুরি।
 

রেসপন্সিভ ডিজাইন এবং মোবাইল অপটিমাইজেশনের মূল বিষয়

রেসপন্সিভ ডিজাইন ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটকে বিভিন্ন স্ক্রিন সাইজের সাথে মানানসই করা যায়। মোবাইল অপটিমাইজেশনের জন্য ওয়েবসাইটের স্পিড বাড়ানো, টাচস্ক্রিন বান্ধব নেভিগেশন তৈরি করা এবং মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য কন্টেন্ট অপটিমাইজ করা প্রয়োজন।
 

Google এর মোবাইল-ফার্স্ট ইনডেক্সিং:

গুগল এখন ডেস্কটপের পরিবর্তে মোবাইল সংস্করণকে প্রাধান্য দেয় ইন্ডেক্সিং এবং র‍্যাংকিংয়ের জন্য। তাই, আপনার ওয়েবসাইটের মোবাইল সংস্করণটি ডেস্কটপ সংস্করণের মতো ভালো হওয়া উচিত।

 

4. ওয়েবসাইট সুরক্ষা (Website Security):

HTTPS এর গুরুত্ব এবং ব্যবহার:

HTTPS একটি সুরক্ষিত প্রোটোকল যা আপনার ওয়েবসাইটে আসা এবং যাওয়া ডেটাকে এনক্রিপ্ট করে। এটি ব্যবহারকারী এবং ওয়েবসাইটের মধ্যে একটি সুরক্ষিত সংযোগ স্থাপন করে। গুগল HTTPS কে একটি র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে।
 

SSL সার্টিফিকেট কি এবং কেন প্রয়োজন

SSL (Secure Sockets Layer) সার্টিফিকেট একটি ডিজিটাল সার্টিফিকেট যা একটি ওয়েবসাইটের পরিচয় নিশ্চিত করে এবং HTTPS সংযোগ সক্রিয় করে। এটি ওয়েবসাইটে আসা এবং যাওয়া ডেটাকে সুরক্ষিত রাখে।
 

সুরক্ষা ত্রুটি এবং দুর্বলতা এড়ানো

ওয়েবসাইটকে হ্যাকিং এবং অন্যান্য সুরক্ষা ত্রুটি থেকে রক্ষা করতে নিয়মিতভাবে নিরাপত্তা অডিট করা এবং সুরক্ষা দুর্বলতাগুলো দূর করা প্রয়োজন। এর মধ্যে নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করা, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা এবং ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা অন্তর্ভুক্ত।

 

5. সাইট আর্কিটেকচার (Site Architecture):

ওয়েবসাইটের কাঠামো এবং নেভিগেশন

একটি ওয়েবসাইটের কাঠামো ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভাল কাঠামো ওয়েবসাইটকে সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে এবং সার্চ ইঞ্জিনকে গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
 

ক্লিন ইউআরএল স্ট্রাকচার এবং অভ্যন্তরীণ লিংকিং

পরিষ্কার এবং সংক্ষিপ্ত ইউআরএল ব্যবহার করা ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের জন্য উপকারী। অভ্যন্তরীণ লিংকিং একটি ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পেজের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে, যা ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনকে সাইটের কন্টেন্ট খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
 

সাইলো স্ট্রাকচার এবং এর সুবিধা 

সাইলো স্ট্রাকচার হল একটি ওয়েবসাইটকে লজিক্যাল বিভাগে ভাগ করে কন্টেন্ট সংগঠিত করার একটি পদ্ধতি। এটি একটি ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতা বাড়াতে এবং সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং উন্নত করতে সাহায্য করে।
 

6. Schema Markup:

Schema Markup কি এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ

Schema Markup হল কোডের একটি অংশ যা সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট সম্পর্কে আরও ভালোভাবে তথ্য প্রদান করে। এটি আপনার ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা বাড়াতে সাহায্য করে।

বিভিন্ন ধরনের Schema এবং তাদের ব্যবহার:  

বিভিন্ন ধরনের Schema Markup রয়েছে, যেমন Article, Product, এবং Recipe প্রতিটি প্রকার বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্টের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং সার্চ ইঞ্জিনকে সেই কন্টেন্ট সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে।

রিচ স্নিপেট এবং সার্চ ফলাফলে এর প্রভাব

Schema Markup ব্যবহার করে, আপনি সার্চ ফলাফলে রিচ স্নিপেট পেতে পারেন। রিচ স্নিপেট আপনার ওয়েবসাইটের ক্লিক-থ্রু রেট (CTR) বাড়াতে পারে।

7. ক্যানোনিকাল ট্যাগ (Canonical Tags):

ক্যানোনিকাল ট্যাগের ব্যবহার এবং গুরুত্ব:  

ক্যানোনিকাল ট্যাগ হল একটি HTML এলিমেন্ট যা সার্চ ইঞ্জিনকে একটি পেজের "ক্যানোনিকাল" বা পছন্দের সংস্করণ সম্পর্কে জানায়। এটি নকল কন্টেন্ট সমস্যা এড়াতে সাহায্য করে।

নকল কন্টেন্ট সমস্যা সমাধান করা:

ক্যানোনিকাল ট্যাগ ব্যবহার করে, আপনি সার্চ ইঞ্জিনকে জানাতে পারেন যে কোন সংস্করণটি আসল এবং কোনটি নকল, যাতে আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

8. এইচটিএমএল এবং কোড অপটিমাইজেশন (HTML and Code Optimization):

HTML কোড অপটিমাইজ করার নিয়ম:

আপনার HTML কোড পরিষ্কার এবং ত্রুটিমুক্ত হওয়া উচিত। অপ্রয়োজনীয় কোড সরানো এবং কোডকে সংক্ষিপ্ত করা উচিত।

CSS এবং JavaScript অপটিমাইজেশন

CSS এবং JavaScript ফাইলগুলোকে ছোট করা এবং একত্রিত করা উচিত, যাতে ওয়েবসাইটের লোডিং সময় কমে যায়।

W3C বৈধতা এবং এর গুরুত্ব

W3C বৈধতা নিশ্চিত করে যে আপনার HTML, CSS, এবং অন্যান্য ওয়েব প্রযুক্তি W3C এর মান মেনে চলছে। এটি বিভিন্ন ব্রাউজারে আপনার ওয়েবসাইটের সামঞ্জস্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

টেকনিক্যাল এসইও-এর সেরা অনুশীলন (Best Practices for Technical SEO):

টেকনিক্যাল এসইও একটি চলমান প্রক্রিয়া। এখানে কিছু সেরা অনুশীলন দেওয়া হলো যা আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীর জন্য অপ্টিমাইজ করতে সাহায্য করবে:

নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইটের স্পিড এবং পারফরম্যান্স পর্যবেক্ষণ করা:  

আপনার ওয়েবসাইটের স্পিড এবং পারফরম্যান্স নিয়মিত পরীক্ষা করুন। Google PageSpeedInsights, GTmetrix, এবং WebPageTest এর মতো টুল ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম এবং অন্যান্য পারফরম্যান্স মেট্রিক ট্র্যাক করুন। সমস্যা খুঁজে বের করে দ্রুত সেগুলো সমাধান করুন।

মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়েবসাইট অপটিমাইজ করা: 

নিশ্চিত করুন যে আপনার ওয়েবসাইট মোবাইল-ফ্রেন্ডলি। আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন রেসপন্সিভ হতে হবে, যাতে এটি বিভিন্ন ডিভাইসে সঠিকভাবে দেখায়। মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য ফন্ট এবং ইমেজ অপটিমাইজ করুন, এবং টাচস্ক্রিন নেভিগেশন সহজ করুন।

ওয়েবসাইটকে সুরক্ষিত রাখতে HTTPS ব্যবহার করা:  

আপনার ওয়েবসাইটে HTTPS ব্যবহার করুন। এটি আপনার ওয়েবসাইটে আসা এবং যাওয়া ডেটাকে এনক্রিপ্ট করে এবং ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষিত রাখে। একটি SSL সার্টিফিকেট ইনস্টল করুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত পেজ HTTPS ব্যবহার করছে।

একটি পরিষ্কার এবং সুগঠিত সাইট আর্কিটেকচার তৈরি করা:  

আপনার ওয়েবসাইটের কাঠামো এমনভাবে তৈরি করুন যাতে ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিন সহজেই নেভিগেট করতে পারে। একটি পরিষ্কার ইউআরএল স্ট্রাকচার ব্যবহার করুন এবং গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলোতে অভ্যন্তরীণ লিংকিং করুন। সাইলো স্ট্রাকচার ব্যবহার করে আপনার কন্টেন্টকে লজিক্যাল বিভাগে ভাগ করুন।

Schema Markup ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনকে অতিরিক্ত তথ্য প্রদান করা:  

আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট সম্পর্কে সার্চ ইঞ্জিনকে আরও তথ্য জানাতে Schema Markup ব্যবহার করুন। এটি আপনার ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা বাড়াতে এবং রিচ স্নিপেট পেতে সাহায্য করে। আপনার কন্টেন্টের ধরন অনুযায়ী সঠিক Schema Markup ব্যবহার করুন (যেমন, Article, Product, Recipe)

নকল কন্টেন্ট সমস্যা এড়াতে ক্যানোনিকাল ট্যাগ ব্যবহার করা:  

আপনার ওয়েবসাইটে নকল কন্টেন্ট থাকলে, ক্যানোনিকাল ট্যাগ ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনকে জানান যে কোন সংস্করণটি আসল। এটি আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিংকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করা থেকে রক্ষা করবে।

পরিশেষ

টেকনিক্যাল এসইও একটি ওয়েবসাইটের অনলাইন সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিশ্চিত করে যে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের জন্য অপ্টিমাইজ করা হয়েছে। একটি শক্তিশালী টেকনিক্যাল এসইও কৌশল আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং উন্নত করতে, ট্র্যাফিক বাড়াতে এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে পারে।

আমাদের পরবর্তী টিউটোরিয়ালে, আমরা অফ পেইজ এসইও নিয়ে আলোচনা করব। আমরা দেখব কিভাবে ব্যাকলিঙ্ক তৈরি করতে হয়, সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ওয়েবসাইটের প্রচার করতে হয়, এবং অন্যান্য কৌশল যা আপনার ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা এবং কর্তৃত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।

যদি আপনার টেকনিক্যাল এসইও বা অন্য কোনো এসইও সম্পর্কিত প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং আপনাকে সহায়তা করতে সর্বদা প্রস্তুত।

আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ! পরবর্তী পর্বে আবার দেখা হবে।

এসইও টিউটোরিয়াল - প্রথম পর্ব : কিওয়ার্ড রিসার্চ (SEO Tutorial Part 1: Keyword Research)

এসইও টিউটোরিয়াল -- দ্বিতীয় পর্ব : অন পেইজ এসইও (SEO Tutorial Part 2: ON Page SEO)

এসইও টিউটোরিয়াল - চতুর্থ পর্ব: অফ পেইজ এসইও (SEO Tutorial Part 4: OFF Page SEO)